মারমা রূপকথা: ন ক নিং

Jumjournal
Last updated Jan 17th, 2020

855

featured image

‘ন ক নিং” —- ঠক, প্রতারণার এক সার্থক চরিত্র। বাংলা সাহিত্যে গোপাল ভাঁড়ের গল্প, বীরবলের হাল খাতা, হোজ্জা নাসিরুদ্দীনের গল্প সম্ভার, ঠক চাচার কাহিনী যেমন হাস্যরস সমৃদ্ধ এক একটি অনবদ্য সৃষ্টি, অনুরূপভাবে মারমা লোকসাহিত্যে ন ক নিং-ও একটি টক-মিষ্টিঝালে ভরা অপরূপ সৃষ্টি।

ন ক নিং জীবনভর প্রতারণার আশ্রয়ে কিভাবে জীবন যাপন করেছে তারই একটি জীবন কাহিনী ভিত্তিক গল্প সম্ভার। মারমা সমাজে ও সাহিত্যে ঠক, প্রতারক, মিথুক ইত্যাদি প্রকৃতির প্রতীকরূপে সর্বাধিক পরিচিত ন ক নিং।

গল্পটি কয়েকটি ছোট ছোট খন্ডে বিভক্ত। কিছু কিছু গল্প খন্ড আকার/বৈশিষ্ট্য। বিন্যাসে প্রায় একইরূপ হলেও আমেজে ভিন্ন মাত্রা সংযোজিত রয়েছে। এখানে পাঁচটি খন্ড উপস্থাপন করা হল।

জন্ম কথা

কোন এক গ্রামে নিঃসন্তান এক দম্পতি সুখ-শান্তিতে বসবাস করছিল। অভাব, অনটন থাকলেও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনদিন ঝগড়া হয়নি, অন্তর্ঘও ছিল না। দম্পতির একটা দুঃখ, তাদের কোন সন্তান-সন্ততি নেই।

এমনিভাবে দীর্ঘ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর একদিন রাত্রে স্ত্রী একটি অদ্ভুত স্বপ্ন দর্শন করে। সাগরের দুই পাড়ে দুটি পা রেখে উপুড় হয়ে পানি পান করা, অদ্ভুত স্বপ্ন বটে। কাল বিলম্ব না করে এই অদ্ভুত স্বপ্নের মর্মার্থ বের করার জন্য দম্পতি প্রখ্যাত “বিদাং ছারা” (পন্ডিত)-র নিকট শরণাপন্ন হল।

তখন বিদাং ছারার (পন্ডিত) ঘরে দর্শনার্থী কয়েকজন ছিল। স্ত্রী লোকটি পূর্ব রাত্রের স্বপ্নের বিবরণ দিল। উপস্থিত দর্শনার্থীগণ হিহি করে হেসে ফেলল। বিদাং ছারা দর্শনার্থীদেরকে হাসা থেকে নিবৃত্ত করেন।

বিদাং ছারা দম্পতিকে তার সন্নিকটে ডেকে বললেন,“তোমাদের ঘরে এমন একজন মেহমান আসবেন যিনি মহাজ্ঞানী বলে পরিচিতি লাভ করবেন; কিন্তু এখন তা হবে না। কারণ ঐ মেহমানের আত্মিক সত্তাকে হাস্যরসে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তারপরও তিনি বিখ্যাত হবেন।”

বিদাং ছারা কিসের উপর বিখ্যাত হবেন তা বলেননি। বিদাং ছারার ভবিষ্যদ্বাণী শুনে দম্পতিটি দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে বাড়িতে প্রত্যাবর্তন করল। আর একদিন দু’দিন, এক বছর দু’বছর যেতে যেতে বিদাং ছারার ভবিষ্যদ্বাণী তারা ভুলে গেল।

এক সময় ঐ দম্পতির ঘরে এক ফুটফুটে পুত্র-সন্তান জন্ম নিল। স্বামী-স্ত্রী উভয়ে আনন্দে আত্মহারা। দীর্ঘদিনের ইচ্ছা তাদের পূর্ণ হল। পুত্র সন্তানের নাম রাখা হয় “ন ক নিং”।

গৃহত্যাগ

গরীবের সংসার। তার উপর নতুন সন্তান আগমন। টাকা-পয়সা রোজগার করতে ন ক নিং-এর পিতা করাতী দলের সাথে কাঠ চিড়াতে জঙ্গলে গেল। তখন ন ক নিং-এর বয়স ৫/৬ বছর।

পাঁচ/ছয় মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও স্বামী বাড়িতে প্রত্যাবর্তন করছে না দেখে ন ক নিং-এর মা ছেলে ন ক নিং-কে পিতাকে সন্ধানের জন্য জঙ্গলে পাঠাল।

 ন ক নিং যথাস্থানে পৌঁছে পিতার সাথে দেখা করল। পিতা সন্তানের নিকট বাড়ির কুশলাদি জিজ্ঞেস করল। ন ক নিং ইচ্ছে করে পিতার সহিত মিথ্যা কথা শুরু করল, “বাবা, মা তো এখন বাড়িতে নেই। তিনি বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।

শুনলাম, তিনি দ্বিতীয় বিবাহ করেছেন।” সন্তানের নিকট স্ত্রী-র কথা শুনে রাগে-ক্ষোভে পিতা অস্থির হয়ে পড়ল। সে নিজেকে সংযত করে নিল এবং ন ক নিং-কে কিছু টাকা-পয়সা দিয়ে বাড়িতে প্রত্যাবর্তন করাল।

 ন ক নিং বাড়িতে যথাসময়ে পৌঁছার পর মা-র কাছেও পিতা সম্পর্কে উল্টো সংবাদ দিল, “মা, বাবা তো আর বাড়িতে ফিরবেননা। তিনি ওখানে আর একটা বিবাহ করেছেন। যার জন্য দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও তিনি বাড়িতে আসেননি।”

স্বামী সম্পর্কে সন্তানের নিকট কথাটা শুনে স্ত্রী প্রায় পাগল হয়ে গেল। রাগে-ক্ষোভে স্বামী ও স্ত্রী একে অপরের আর কোন খবর নিল না। এইভাবে দীর্ঘ ২/৩ বছর কেটে গেল।

একদিন ন ক নিং-এর পিতা সত্যি বাড়ি ফিরল । ন ক নিং-এর মা বিস্মিত হয়ে গেল।  অনুরূপভাবে ন ক নিং-এর পিতাও স্ত্রীকে আগের মতো পেয়ে থ হয়ে গেল।

পরে জানা গেল যে, তাদের আদরের সুপুত্র ন ক নিং এতো দিন মিথ্যা কথা বলে দুঃখ ও মনে অশান্তি দিয়ে রেখেছিল। স্বামী-স্ত্রী উভয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে পুত্র ন ক নিং-কে তাজ্য পুত্র ঘোষণা করল এবং বাড়ি হতে বিতাড়িত করল। পিতামাতার বিতাড়নে ন ক নিং বাড়ি ও গ্রাম ছাড়ল।

আখ চুরির অভিযান

বাড়ি হতে বিতাড়িত হয়ে ন ক নিং বহু দূরে অন্য আর একটি গ্রামে বৌদ্ধ মন্দিরে উঠল। ন ক নিং বৌদ্ধ মন্দিরে অতি অল্প সময়ের মধ্যে সবার বিশ্বস্ততা ও গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করে নিল।

মন্দিরে তার সমবয়সী একজন “কারগাসে” (বিহারাধ্যক্ষের ব্যক্তিগত সেবক) ছিল। একদিন তারা মন্দিরের পার্শ্বে আখক্ষেত হতে আখ চুরি করার শলা পরামর্শ করল। দিন-ক্ষণ সব ঠিক করল। নির্ধারিত দিন-ক্ষণে মন্দির থেকে শুরু করল চুরির অভিযান।

রাস্তায় এসে কারগাসে ন ক নিং-কে বলল, “ন ক নিং, তুমি কি দিয়ে আখ কাটবে?” ন ক নিং তখন বলল, “কেন, এইতো” বলে একটা “ক্লাইসং” (ডুলু, চট্টগ্রামের শব্দ) বের করে দেখালো। কারগাসে অবাক হল, “এ কেমন কথা, ক্লাইসং দিয়ে কি আখ কাটা যায়?

ন ক নিং বলল, “কাটা যায় অতি নিশ্চিন্তে।” “ক্যামন করে ?” পুনরায় কারগাসে জিজ্ঞেস করল। ন ক নিং বলল, “তোমার ছুরি দিয়ে আখ কাটলে শব্দ হবে। তখন তো মালিক আমাদেরকে ধরে ফেলবে।

এই ক্লাইসং দিয়ে আখের গোড়ায় বসিয়ে দু-এক বার টান দিলেই ব্যস, সাড়া শব্দ ছাড়াই কাজ সমাধা হয়ে যাবে।” বলার সাথে সাথে রাস্তার পাশে কচু ক্ষেত্রে কচু গাছ কেটে দেখাল।

কারগাসে ন ক নিং-এর যুক্তিকে যথার্থ যুক্তি মনে করতে লাগল। শেষে কারগাসে ছুরি আর ক্লাইসং বদলাবদলি করতে অনুরোধ করল। ন ক নিং প্রথমে অনিচ্ছা প্রকাশ করল।

কারগাসেও নাছোড়বান্দা, বদল করতে চায়। শেষে ন ক নিং অনিচ্ছা সত্ত্বেও দিতে হচ্ছে এমন ভাব দেখিয়ে বদল করল।

আখ ক্ষেতে উভয়ে ডুকল । ন ক নিং ছুরি দিয়ে ফটাফট করে আখ কেটে দেরী না করে আখ ক্ষেত হতে বের হয়ে আসল। কিন্তু কারগাসে তখনো একটাও আখ পায়নি। অনেক চেষ্টার পর কোন আখ না পেয়ে বিফল মনোরথে মন্দিরে ফিরল।

এদিকে ন ক নিং মন্দিরে এসে আখ চিবাতে চিবাতে বলল, “কি রে কারগাসে, আখ কোথায়?” “অনেক চেষ্টা করেও কোন আখ তো পেলাম না।

তুমি আমাকে কয়েকটা আখ দিবে?” কারগাসে বলল। “সে কেমন কথা করগাসে, উভয়ে চুরি করতে গেলাম, তুমি পাওনি বলে আমার থেকে দিতে হবে ? ঠিক আছে, এই নাও।” বলে দু’টি আখ কারগাসে-কে দিল ন ক নিং।

মাছি নিধন অভিযান

ন ক নিং-কে একদিন বাজারে পাঠানো হল। ন ক নিং বাজার থেকে ফিরে এসে বিহারাধ্যক্ষকে বলল, “ভাঙে, বাজারে অনেকে বলছে, আর কিছু দিনের মধ্যে নাকি লবণ সংকট হবে।

রাজার পেয়াদায় মুখ থেকেও আমি নিজেই শুনেছি। রাজা এই-ও নির্দেশ দিয়েছেন যে, কেউ কোনভাবে লবণ মজুদ করতে পারবে না। রাজার নির্দেশ অমান্যকারীকে শান্তি দত ভোগ করতে হবে।” বিহারাধ্যক্ষ চিন্তায় পড়লেন। ন ক নিং-কে এই সংকট মোকাবেলা করার জন্য উপায় উবনের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হল।

ন ক নিং বিহারাধ্যক্ষকে বলল, “ভান্তে, কোন চিন্তার কারণ নেই। আমি উপায় উদ্ভবন করে ফেলেছি। বিহারাধ্যক্ষ উপায় জানতে চাইলেন। ন ক নিং বলল, “ভান্তে, আমরা যারা মন্দিরে আছি সবাই বিভিন্ন সময়ে এক/দুই সের লবণ কিনব।

এতে রাজার লোক ধরতে পারবে না যে, আমরা লবণ মজুদ করতে যাচ্ছি। সব লবণ একত্র করে বস্তায় ভরে পুকুরে পানির নীচে রাখলে কাক-পাখীও জানবে না।

ন ক নিং-এর পরামর্শ যথার্থ হয়েছে। সুতরাং বিহারাধ্যক্ষ সেইভাবে কাজ করার জন্য নির্দেশ দিলেন। যেমন পরামর্শ ও নির্দেশ তেমন কাজ। দুই-তিন দিনের ভিতর সব কাজ শেষ করা হল। লবণ সংকট কেটে গেল।

 দুই-তিন মাস পর বস্তার লবণ উত্তোলন করা হল পুকুর থেকে। কিন্তু এক দানাও লবণ নেই। কার ভিতর একটা বড় রুই মাছ পাওয়া গেল। ন ক নিং-এর যুক্তি হল, “এই রুই মাছই লবণ খেয়ে ফেলেছে। সুতরাং এই মাহকে রান্না করে খেতে হবে।”

বিহারাধ্যক্ষ তা-ই নির্দেশ দিলেন। মাছকে সুন্দর করে কেটে রান্না করা হল এবং পরের দিন খাওয়ার জন্য যত করে রাখা হল।

এদিকে ন ক নিং-এর মাছ খেতে লোভ ধরে গেল। সে লোভ সংবরণ করতে না পেরে রাত্রে চুরি করে সব মাছ খেয়ে ফেলল। কিছু উচ্ছিষ্ট ও কাঁটা, হাড় ইত্যাদি রেখে প্রচুর মাছি ধরে ভর্তি করলো ডেকচিতে এবং অসহনীয় দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা ভরে দিয়ে সুন্দর ঢাকনা দিয়ে আবার পূর্বাবস্থায় রেখে দিল।

পরের দিন ভাভে ভাত খেতে বসলেন। রান্না করা মাছ আনার জন্য বললেন। ডেকচিসহ ভান্তের পার্শ্বে রাখা হল। মাছ নেওয়ার জন্য ঢাকনা খুলতেই কি এক বিষম কান্ড। ভোঁভোঁ করে অসংখ্য মাছি বের হল, তার সাথে অসহনীয় দুর্গন্ধ। এদিকে মাছও নেই।

বিহারাধ্যক্ষ রাগত স্বরে ন ক নিং-কে ডাকলেন। এই অবস্থা দেখে ন ক নিং বলল, “ভান্তে, এই মাছি কুলই আপনার মাছ সব খেয়ে ফেলেছে। এদেরকে হত্যা করতে হবে।” বিহারাধ্যক্ষ সবাইকে মাছি নিধন অভিযানে অংশগ্রহণের জন্য বললেন।

মন্দিরে উপস্থিত সব মানুষ যেভাবে পারে সেভাবে মাছি হত্যা শুরু করল। – এ সময় একটা মাছি বিহারাধ্যক্ষের নাকের ডগায় বসল। বিহারাধ্যক্ষ ন ক নিং-কে ডেকে বললেন, “ন ক নিং, আমার নাকের ডগায় একটা মাছি। একে হত্যা কর।”

যেমন নির্দেশ তেমন কাজ। ন ক নিং কুমুই (চেঁকির মুলা) দিয়ে সজোরে নাকের ডগায় দিল একটা মার। ধপাস করে পড়ে গেলেন বিহারাধ্যক্ষ। নাক দিয়ে গগর করে রক্ত বের হতে লাগল। বৈদ্য (কবিরাজ) ডেকে এনে কোনরকমে সুস্থ করা হল।

গুরুর নির্দেশ পালন

মন্দিরে মাছি নিধন অভিযান ঘটনার পাঁচ/ছয় মাস পর। কোন এক দূর গ্রাম থেকে ঐ। মন্দিরের বিহারাধ্যক্ষকে “আপাং (ভাতেকে পিন্ডদান উপলকে নিমন্ত্রণ) করা হল।

বিহারাধ্যক্ষ ন ক নিং-কে ডেকে বললেন, ‘ন ক নিং, আমি আগামীকাল খুব ভোরে হতে আপাং -এ যাচ্ছি। মন্দিরে উপযুক্ত সাবালক লোক থাকবে না। তুমি সব কিছু দেখে-শুনে রাখবে।

যেহেতু আমি খুব ভোর হতে আপাং-এ যাব, তাই তুমি ভোরে আমাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলবে। আর আমি যাওয়ার পর মন্দিরে কাউকে প্রবেশ করতে দিবে না। এমনকি আমার বাপ-দাদা আসলেও প্রবেশ অধিকার রাখবে না।”

 ন ক নিং এই অভাবনীয় ক্ষমতা পাওয়ার পর ভান্তেকে এক ফ্যাসাদে ফেলার জন্য কুমতলব খুঁজে বের করল। রাত্রে মন্দিরের পূর্বদিকের বড় বড় গাছসমূহের উপরে বড় বড় মশাল বাঁধল এবং রাত দুপুরে আগুন ধরিয়ে দিল।

পরিবেশকে ভোরের মত করল এবং তাড়াহুড়া করে ভান্তেকে জাগাতে শুরু করল । ভান্তে তড়িঘড়ি করে উঠলেন এবং জানালা দিয়ে দেখলেন, সত্যি ভোর হতে চলেছে।

প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র নিয়ে আপাং-এর উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন। কিছু দূর যেতে যেতে পথটা অন্ধকার হয়ে আসল। ভান্তে অন্ধকার পথে অগ্রসর হতে পারলেন না। মন্দিরের উদ্দেশ্যে পুনরায় ফিরলেন।

এদিকে ন ক নিং মন্দিরের সকল জানালা-দরজা বন্ধ করে কাঁথায় মাথা ঢেকে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। ভান্তে অন্ধকার রাস্তায় হোঁচট-আছাড় খেতে খেতে মন্দিরের সদর দরজায় এলেন এবং নক নিং-কে দরজা খুলতে বললেন।

ন ক নিং ভান্তেকে না চেনার ভান করে বলল, “ভান্তে রাত্রে কাউকে প্রবেশ করতে দিতে নিষেধ করে গেছেন। তাঁর (ভান্তের) নির্দেশ অমান্য করতে পারব না। যদি চান আগামীকাল সকালে আসুন। এখন যান।

বারবার অনুরোধ করার-পরও ন ক নিং দরজা খুলছে না দেখে মন্দিরের উঠানে একটি লাউ-এর মাচাং-এ উঠে ভান্তে শুয়ে পড়লেন। রাতভর হাঁটাহাঁটি এবং যথাস্থানে বিছানা না হওয়ায় বৃদ্ধ ভান্তে ক্লান্তঅবসন্ন হয়ে ভোরবেলা পর্যন্ত ঘুমিয়ে রইলেন।

এদিকে ন ক নিং না জানার ভান করে লাউ-এর মাচাং-এর নীচে গেল এবং ভান্তের চুলহীন মুন্ডে কড়া টিপুনি কাটতে লাগল। হুড়মুড় করে ভান্তে উঠে পড়লেন। ততক্ষণে ভান্তে মাচাং থেকে ধপ্ করে মাটিতে পড়লেন।

ভান্তে রাগে ন ক নিং-এর উপর মহাক্ষেপা। ভান্তে ন ক নিং-কে টেনে হিচড়ে মন্দিরে তুললেন। তখন ন ক নিং বলল, “ভান্তে, আপনি আমার উপর অন্যায় করছেন।

আপনি আমাকে রাত্রে কোন লোক মন্দিরে প্রবেশ নিষিদ্ধ বলেছেন, আপনার সেই নির্দেশটুকু আমি পালন করেছি। আর আমি কি জানি আপনি ঐ মাচাং-এর উপর রাত্রি যাপন করেছেন।

আমি তো সকালে লাউ খুঁজতে গিয়েছিলাম। আপনার চুলবিহীন মুভূতত লাউয়ের মতো। তাই ভুল করে আপনার মাথায় টিপুনি পড়েছে। আমাকে মাফ করে দিন। আর আপনি আমাকে এরপরও যদি অন্যায় করেন তাহলে গ্রামের সব মানুষকে আমি বলে দেব।”

ভান্তে লজ্জায় নক নিং-এর উপর আর কিছু করলেন না। শুধু মন্দির ছেড়ে চলে যেতে বললেন। নক নিং কাপড়-চোপড় নিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে মন্দির হতে বের হয়ে এসে সদর, রাস্তায় উঠল । নাক বরাবর পূর্বদিকে যাবার জন্য মনঃস্থির করে হাঁটা শুরু করল।


লেখকঃ চাই সুই হ্র

জুমজার্নালে প্রকাশিত লেখাসমূহে তথ্যমূলক ভুল-ভ্রান্তি থেকে যেতে পারে অথবা যেকোন লেখার সাথে আপনার ভিন্নমত থাকতে পারে। আপনার মতামত এবং সঠিক তথ্য দিয়ে আপনিও লিখুন অথবা লেখা পাঠান। লেখা পাঠাতে কিংবা যেকোন ধরনের প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন - jumjournal@gmail.com এই ঠিকানায়।

আরও কিছু লেখা