পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আইন

Jumjournal
Last updated Nov 19th, 2020

707

featured image

( ২০১৪ সনের ৮ নং আইন )

[ ৮ জুলাই, ২০১৪ ]

Chittagong Hill Tracts Development Board Ordinance, 1976 রহিতপূর্বক সংশোধনসহ উহা পুনঃপ্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন

যেহেতু Chittagong Hill Tracts Development Board Ordinance, 1976 (Ordinance No. LXXVII of 1976) রহিতপূর্বক সংশোধনসহ উহা পুনঃপ্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;   সেহেতু এতদ্‌দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রয়োগ ও প্রবর্তন:

১। (১) এই আইন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন র্বোড আইন, ২০১৪ নামে অভিহিত হইবে ।  

(২) ইহা পার্বত্য জেলাসমূহে প্রযোজ্য হবে।  

(৩) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

সংজ্ঞা:

২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্হী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-  

(১) “চেয়ারম্যান” অর্থ বোর্ডের চেয়ারম্যান;  

(২) “তহবিল” অর্থ ধারা ১৩ এ উল্লিখিত পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড তহবিল;  

(৩) “পরিচালনা বোর্ড” অর্থ ধারা ৮ এর অধীন গঠিত পরিচালনা বোর্ড;  

(৪) “পাবর্ত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ” অর্থ পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন, ১৯৯৮ (১৯৯৮ সনের ১২ নং আইন ) এর অধীন স্থাপিত পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ;  

(৫) “পার্বত্য জেলা” অর্থ রাঙ্গামাটি ,খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা;  

(৬) “প্রবিধান” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;  

(৭) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;  

(৮) “ বোর্ড” অর্থ ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ;  

(৯) “ভাইস-চেয়ারম্যান” অর্থ বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান;  

(১০) “সদস্য” অর্থ বোর্ডের কোন সদস্য;  

(১১) “সার্কেল চীফ” অর্থ পার্বত্য জেলার চাকমা, বোমাং ও মং সার্কেল চীফ।

বোর্ড প্রতিষ্ঠা:

৩। (১) এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, পাবর্ত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড নামে একটি বোর্ড প্রতিষ্ঠিত হইবে ।

(২) বোর্ড একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং উহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সিলমোহর থাকিবে এবং উহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং স্বীয় নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং উহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।

বোর্ডের কার্যালয়:

৪ । বোর্ডের প্রধান কার্যালয় রাঙ্গামাটিতে অবস্থিত হইবে এবং বোর্ড, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলায় উহার শাখা স্থাপন করিতে পারিবে।


সাধারণ পরিচালনা ও প্রশাসন:

৫। বোর্ডের সাধারণ পরিচালনা ও প্রশাসন পরিচালনা বোর্ডের উপর ন্যস্ত থাকিবে এবং বোর্ড যে সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্য সম্পাদন করিতে পারিবে পরিচালনা বোর্ডও সেই সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্য সম্পাদন করিতে পারিবে।

চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান ও সদস্য:

৬। (১) বোর্ডের একজন চেয়ারম্যান, একজন ভাইস-চেয়ারম্যান ও চার জন সদস্য থাকিবেন। 

 (২) চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং তাহাদের নিযুক্তির মেয়াদ ও শর্তাদি সরকার কর্তৃক স্থিরিকৃত হইবে:  তবে শর্ত থাকে যে, চেয়ারম্যান নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকার উপজাতীয়দেরকে অগ্রাধিকার প্রদান করিবে:  আরো শর্ত থাকে যে, ভাইস চেয়ারম্যান সরকারের অন্যূন যুগ্ম-সচিব এবং সদস্যগণ সরকারের অন্যূন উপ-সচিব হইবেন।  

(৩) চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ বোর্ডের সার্বক্ষণিক কর্মকর্তা হইবেন।  

(৪) চেয়ারম্যান বোর্ডের প্রধান নির্বাহী হইবেন।  

(৫) চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে চেয়ারম্যান তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান তাহার পদে যোগদান না করা পর্যন্ত কিংবা চেয়ারম্যান পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত ভাইস-চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করিবেন।

চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান ও সদস্যদর অযোগ্যতা, অপসারণ ও পদত্যাগ:

৭। (১) কোন ব্যক্তি চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান ও সদস্য হইবার যোগ্য হইবেন না বা থাকিতে পারিবেন না, যদি তিনি-  

(ক) কোন সময় সরকারি চাকুরির জন্য অযোগ্য বা সরকারি চাকুরি হইতে বরখাস্ত হন;  

(খ) নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন;  

(গ) কোন উপযুক্ত আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ ঘোষিত হন; অথবা  

(ঘ) কোন উপযুক্ত আদালত কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত হন।  

(২) উপ-ধারা (১) এর বিধান সত্ত্বেও, সরকার নিম্নবর্ণিত কোন কারণে লিখিত আদেশের মাধ্যমে যে কোন সময় চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান ও সদস্যকে অপসারণ করিতে পারিবে, যদি তিনি –  

(ক) এই আইনের অধীন তাহার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হন বা অস্বীকার করেন বা সরকারের বিবেচনায় দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন; অথবা  

(খ) সরকারের বিবেচনায় চেয়ারম্যান হিসাবে তাহার পদের অপব্যবহার করেন।  

(৩) চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান ও সদস্য তাহার মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে সরকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন।

পরিচালনা বোর্ড গঠন:

৮। নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে পরিচালনা বোর্ড গঠিত হইবে, যথা: –  

(ক) চেয়ারম্যান, যিনি ইহার সভাপতিও হইবেন;  

(খ) ভাইস-চেয়ারম্যান, যিনি ইহার সহ-সভাপতিও হইবেন;  

(গ) পাবর্ত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ কর্তৃক মনোনীত উহার একজন প্রতিনিধি;  

(ঘ) রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি পাবর্ত্য জেলার জেলা প্রশাসক, পদাধিকারবলে;  

(ঙ) পাবর্ত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন উপ-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;  

(চ) রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি পাবর্ত্য জেলা পরিষদ কর্তৃক মনোনীত উহাদের একজন করিয়া প্রতিনিধি;  

(ছ) বোর্ডের চারজন সদস্য, যাহাদের মধ্যে বোর্ড কর্তৃক মনোনীত একজন ইহার সদস্য–সচিবের দায়িত্ব পালন করিবেন।

বোর্ডের কার্যাবলি, ইত্যাদি:

৯। (১) বোর্ডের কার্যাবলি নিম্নরূপ হইবে, যথা:-  

(ক) পাবর্ত্য জেলার জনসংখ্যা, আয়তন ও অনগ্রসরতা বিবেচনা করিয়া পাবর্ত্য জেলাসমূহের উন্নয়নের জন্য প্রকল্প ও স্কিম প্রণয়ন;  

(খ) পাবর্ত্য জেলা সমূহের উপজেলা সদর, ইউনিয়ন ও গ্রামাঞ্চলের জন্য অনধিক ২ (দুই) কোটি টাকার প্রকল্প ও স্কিম অনুমোদন;  

(গ) অনুমোদিত প্রকল্প ও স্কিম বাস্তবায়ন এবং বাস্তবায়ন কার্য তদারকি;  

(ঘ) বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার আর্থিক বা কারিগরি সহায়তায় পরিচালিত উন্নয়ন প্রকল্প ও স্কিম বাস্তবায়ন;  

(ঙ) উপরি-উক্ত কার্যাবলি সম্পাদনের জন্য উহাদের সহিত সংশ্লিষ্ট বা আনুষঙ্গিক প্রয়োজনীয় অন্যান্য কার্য সম্পাদন।  

(২) পাবর্ত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বোর্ড উহার দায়িত্ব পালন করিবে।

পরিচালনা বোর্ডের সভা:

১০। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, পরিচালনা বোর্ড উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিবে।  

(২) সভাপতি কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ, সময় ও স্থানে পরিচালনা বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হইবে।  

(৩) প্রতি ৩ (তিন) মাসে পরিচালনা বোর্ডের কমপক্ষে একটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে।  

(৪) সভাপতি পরিচালনা বোর্ডের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং তাহার অনুপস্থিতিতে সহ-সভাপতি সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।  

(৫) অন্যূন ৮ (আট) জন সদস্যের উপস্থিতিতে পরিচালনা বোর্ডের সভার কোরাম গঠিত হইবে।  

(৬) উপস্থিত সদস্যগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে পরিচালনা বোর্ডের সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির একটি দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।  

(৭) শুধুমাত্র কোনো সদস্য পদে শূন্যতা বা পরিচালনা বোর্ড গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে পরিচালনা বোর্ডের কোনো কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না বা তৎসম্পর্কে কোন প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না ।

পরামর্শক কমিটি:

১১। (১) নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে বোর্ডের একটি পরামর্শক কমিটি গঠিত হইবে, যথা:-  (ক) চেয়ারম্যান, যিনি ইহার সভাপতিও হইবেন;  (খ) তিন জন সার্কেল চীফ অথবা তাহাদের মনোনীত প্রতিনিধি;  (গ) সরকার কর্তৃক মনোনীত পাবর্ত্য জেলা হইতে একজন করিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান;  (ঘ) সরকার কর্তৃক মনোনীত পাবর্ত্য জেলা হইতে একজন করিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ;  (ঙ) সরকার কর্তৃক মনোনীত, সার্কেল চীফের সহিত পরামর্শক্রমে, পাবর্ত্য জেলা হইতে একজন করিয়া হেডম্যান;  (চ) চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, পাবর্ত্য জেলা হইতে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ৩ (তিন) জন সদস্য।  

(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (গ), (ঘ), (ঙ) ও (চ) এর অধীন মনোনীত সদস্যগণ বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত মেয়াদের জন্য সদস্য পদে বহাল থাকিবেন।  

(৩) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সদস্যগণ সভায় উপস্থিতির জন্য বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত হারে ভ্রমন ভাতা প্রাপ্য হইবেন।  

(৪) বোর্ড পরামর্শক কমিটির সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিবে।  

(৫) পরামর্শক কমিটি প্রকল্প ও স্কিম প্রস্তুত এবং উহা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বোর্ডকে পরামর্শ প্রদান করিবে।

অন্যান্য সংস্থার মাধ্যমে প্রকল্প বা স্কিম বাস্তবায়ন:

১২। (১) আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইন বা এই আইনের ধারা ৯ এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উক্ত ধারার অধীন অনুমোদিত কোনো প্রকল্প বা স্কিম বা উহার কোনো অংশ কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা সরকারি সংস্থার এখতিয়ারাধীন এলাকায় থাকিলে, বোর্ড, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার সহিত পরামর্শক্রমে, উক্ত প্রকল্প বা স্কিম বা উহার অংশ বাস্তবায়নের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে এবং উক্তরূপ ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যয়িতব্য অর্থ বোর্ড এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা সরকারি সংস্থা পারস্পরিক সম্মতভাবে বহন করিবে।  

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো প্রকল্প বা স্কিম বাস্তবায়নের জন্য ব্যয়িতব্য খরচ বহনের বিষয়ে মতানৈক্য হইলে উহা সরকার কর্তৃক নিষ্পত্তি হইবে এবং এই ক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হইবে।

তহবিল:

১৩। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড তহবিল নামে একটি তহবিল থাকিবে এবং উহাতে নিম্নবর্ণিত অর্থ জমা হইবে, যথা:-  (ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনিঃশ্বেষযোগ্য ঘূর্ণায়মান ফাণ্ড (non-lapsable revolving fund), যাহা ৩ (তিন) কোটি টাকার বেশী হইবে না;  (খ) সরকারের অনুমোদনক্রমে বোর্ড কর্তৃক গৃহীত ‍ঋণ বা অনুদান;  (গ) অন্য কোনো উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।  

(২) তহবিলের অর্থ কোন তফসিলি ব্যাংকে জমা রাখিতে হইবে :  তবে শর্ত থাকে যে, কোন তফসিলি ব্যাংক না থাকিলে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুমোদিত যে কোন বাণিজ্যিক ব্যাংকে তহবিলের অর্থ জমা রাখা যাইবে ।  

(৩) তহবিল হইতে চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান, সদস্য, বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন, ভাতা ও চাকুরীর শর্তাবলী অনুসারে প্রদেয় অন্যান্য অর্থ প্রদান করা হইবে এবং বোর্ডের প্রয়োজনীয় অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ করা হইবে।

প্রবেশের ক্ষমতা:

১৪। (১) চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান বা সদস্য বা চেয়ারম্যান কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত যে কোনো ব্যক্তি, জনস্বার্থে, নিম্নবর্ণিত যে কোনো উদ্দেশ্যে পাবর্ত্য জেলার কোনো ভূমিতে প্রবেশ করিতে পারিবেন, যথা:-  (ক) কোনো অনুসন্ধান, জরিপ ,পরীক্ষা, মূল্যায়ন বা তদন্ত;  (খ) ভূমির স্তর গ্রহণ;  (গ) নিম্ন স্তরের মাটি খনন বা ছিদ্র করণ;  (ঘ) পূর্ত কাজের চৌহদ্দি ও সীমারেখা নির্ধারণ;  (ঙ) চিহ্ন বা নালা কাটিয়া উক্তরূপ স্তর, চৌহদ্দি ও সীমারেখা চিহ্নিতকরণ; অথবা  (চ) এই আইনের উদ্দেশ্যে পূরণকল্পে যে কোনো কাজ ।  

(২) সংশ্লিষ্ট ভূমির মালিক বা দখলদারকে উক্ত ভূমিতে প্রবেশের উদ্দেশ্য সম্পর্কে অন্যূন ২৪ (চব্বিশ) ঘন্টা পূর্বে নোটিশ প্রদান না করিয়া উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রবেশ করা যাইবে না।  

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন কার্যের ফলে যদি ভূমির কোন ক্ষতি হয়, তাহা হইলে বোর্ড ক্ষতিপূরণ প্রদান করিবে।

ভূমি অধিগ্রহণ:

১৫। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বোর্ডের কার্যাবলি সম্পাদনের জন্য কোনো ভূমির প্রয়োজন হইলে, উহা জনস্বার্থে প্রয়োজন বলিয়া বিবচিত হইবে এবং বোর্ড উক্ত ভূমি অধিগ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট পাবর্ত্য জেলা পরিষদের পুর্বানুমোদন গ্রহণ করিবে; অতঃপর সরকার উক্ত ভূমি Acquisition and Requisition of Immovable property Ordinance, 1982 (Ordinance No. II of 1982) এর অধীন অধিগ্রহণ করিতে পারিবে। 

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন অধিগ্রহণকৃত ভূমির ক্ষতিপূরণ এবং এতদ্‌সংশ্লিষ্ট কোন বিষয় নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত ordinance এর বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।

ঋণ গ্রহণের ক্ষমতা:

১৬। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বোর্ড, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, প্রয়োজনে, ঋণ গ্রহণ করিতে পারিবে।

বোর্ডের কমকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ, ইত্যাদি:

১৭। (১) বোর্ড উহার কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের উদ্দেশ্যে, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো সাপেক্ষে, প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে।  (২) বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ ও চাকুরির শর্তাবলী প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।  

বাজেট:

১৮। বোর্ড প্রতি বৎসর সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্য পরবর্তী অর্থ বৎসরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উক্ত অর্থ বৎসরে সরকারের নিকট হইতে কি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হইবে উহার উল্লেখ থাকিবে।

হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা:

১৯। (১) বোর্ড প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও ফরমে উহার হিসাব রক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।  (২) বাংলাদেশ মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহা-হিসাব নিরীক্ষক নামে অভিহিত, প্রতি বৎসর বোর্ডের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও বোর্ডের নিকট পেশ করিবেন।  (৩) উপ-ধারা (২) এর বিধান মোতাবেক হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা-নিরীক্ষক কিংবা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি বোর্ডের সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংক গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভান্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান, সদস্য, বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।  (৪) উপ-ধারা (২) এর অধীন হিসাব-নিরীক্ষা ছাড়াও Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (P.O.No. 2 of 1973) এর Article 2 (1) (b) তে সংজ্ঞায়িত চার্টার্ড একাউনটেন্ট দ্বারা বোর্ডের হিসার নিরীক্ষা করা যাইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে বোর্ড এক বা একাধিক চার্টার্ড একাউনটেন্ট নিয়োগ করিতে পারিবে।

প্রতিবেদন:

২০। (১) বোর্ড প্রত্যেক অর্থ বৎসর সমাপ্ত হইবার পরবর্তী ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে উক্ত বৎসরের সম্পাদিত কার্যাবলির উপর একটি বার্ষিক প্রতিবেদন সরকারের নিকট দাখিল করিবে।  (২) সরকার প্রয়োজনমত বোর্ডের নিকট হইতে যে কোন সময় বোর্ডের যে কোন বিষয়ের উপর প্রতিবেদন ও বিবরণী আহবান করিতে পারিবে এবং বোর্ড উহা সরকারের নিকট সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে। 

নির্দেশনা প্রদানের ক্ষমতা:

২১। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সময় সময়, পরিচালনা বোর্ডকে প্রয়োজনীয় নিদের্শনা প্রদান করিতে পারিবে এবং পরিচালনা বোর্ড উহা প্রতিপালন করিতে বাধ্য থাকিবে।

বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা:

২২। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।

প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা:

২৩। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বোর্ড, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা বিধির সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ নহে এইরূপ প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।

ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ:

২৪। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।  (২) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।

রহিতকরণ ও হেফাজাত:

২৫। (১) (Chittagong Hill Tracts Development Board Ordinance , 1976 (Ordinance, No. LXXVII of 1976) ,অতঃপর উক্ত Ordinance বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্বারা রহিত করা হইল।  

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও-  

(ক) এই আইনের অধীন পরিচালনা বোর্ড গঠিত না হওয়া পর্যন্ত উক্ত Ordinance এর অধীন গঠিত Board এই আইনের অধীন গঠিত পরিচালনা বোর্ড বলিয়া গণ্য হইবে;  

(খ) উক্ত Ordinance এর অধীন কৃত কোন কাজ বা গৃহীত কোন ব্যবস্থা, প্রণীত কোনো বিধি বা প্রবিধান, ইস্যুকৃত কোন আদেশ, বিজ্ঞপ্তি বা প্রজ্ঞাপন, প্রদত্ত কোনো নোটিশ, প্রস্তুতকৃত, বাজেট প্রাক্কলন, স্কিম বা প্রকল্প এই আইনের অধীন কৃত, গৃহীত, ইস্যুকৃত প্রদত্ত বা প্রস্তুতকৃত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে। 

(৩) উক্ত Ordinance রহিত হইবার সঙ্গে সঙ্গে উক্ত Ordinance এর অধীন প্রতিষ্ঠিত Board এর –  

(ক) সকল সম্পদ, অধিকার, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব, সুবিধা এবং স্থাবর ও অস্থাবর সকল সম্পত্তি, নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, অন্য সকল দাবী ও অধিকার, সকল হিসাব বহি, রেজিস্টার, রেকর্ড এবং অন্যান্য দলিল বোর্ডের নিকট হস্তান্তরিত ও উহার উপর ন্যস্ত হইবে;  

(খ) সকল ঋণ, দায় ও দায়িত্ব এবং উহার দ্বারা, উহার পক্ষে বা উহার সহিত সম্পাদিত সকল চুক্তি, যথাক্রমে বোর্ডের ঋণ, দায় ও দায়িত্ব এবং উহার দ্বারা, উহার পক্ষে বা উহার সহিত সম্পাদিত চুক্তি বলিয়া গণ্য হইবে;  

(গ) বিরুদ্ধে বা তদ্‌কর্তৃক দায়েরকৃত মামলা বা আইনগত কার্যধারা বোর্ডের বিরুদ্ধে বা বোর্ড কর্তৃক দায়েরকৃত মামলা বা আইনগত কার্যধারা বলিয়া গণ্য হইবে;  

(ঘ) সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারী হিসাবে গণ্য হইবেন এবং এই আইন প্রবর্তনের অব্যবহিত পূর্বে তাহারা যে শর্তে চাকুরিতে নিয়োজিত ছিলেন সেই সকল শর্তে নিযুক্ত থাকিবেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না বোর্ড কর্তৃক তাহাদের চাকুরির শর্তাবলী পরিবর্তিত হয়।

জুমজার্নালে প্রকাশিত লেখাসমূহে তথ্যমূলক ভুল-ভ্রান্তি থেকে যেতে পারে অথবা যেকোন লেখার সাথে আপনার ভিন্নমত থাকতে পারে। আপনার মতামত এবং সঠিক তথ্য দিয়ে আপনিও লিখুন অথবা লেখা পাঠান। লেখা পাঠাতে কিংবা যেকোন ধরনের প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন - jumjournal@gmail.com এই ঠিকানায়।

আরও কিছু লেখা