ম্রো রূপকথা – রবখার সাংচিয়া (লাল কাঁকড়ার গল্প)

Jumjournal
Last updated Aug 18th, 2020

1704

featured image

অনেক অনেক দিন আগের কথা। এক ঝিরিতে বাস করতো এক ‘রবখার’ (লাল কাঁকড়া)। রবখার-এর ছিলো শত সহস্র সন্তান। শত শত কানি জায়গায় জুম চাষ করলেও তাকে খাবারের সংকটে থাকতে হয়। তাই বেচারীকে দিবা-রাত্রি খাটুনি করত হয়। একদিন তার কাজ করতে করতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো। এমন সময় ক্লুংবুট (এক প্রকার পাখি) বুট বুট শব্দে বাচ্চাদের ডাকলো রাত্রি যাপনের জন্য। এদিকে রবখার তার শত সহস্র বাচ্চাকে ক্লুংবুট চুলার আগুনে সিদ্ধ করেছে বলে মনে করে ক্লুংবুটকে মারার জন্য মুলি বাঁশের ধনু তৈরি করে এক বৃক্ষের দিকে তাক করে পরখ করলো। ঐ সময় বৃক্ষের উপর একটি বানর বসা ছিলো। রবখার ধনুক দেখে বানর ভয়ে গাছের শাখায় লাফালাফি করতে লাগলো। এদিকে বানরের লাফালাফিতে ‘উইনুং’ (এক প্রকার লতাতে ধরা ফল) ছিড়েঁ গর্ভবতী হরিণের পেটে গিয়ে পড়লো। হরিণটি পেটের যন্ত্রনায় এক জুমের মধ্যে গিয়ে দৌঁড়াতে লাগল। হরিণের খুঁরের আঘাতে মিষ্টি কুমড়া ফলটি ছিঁড়ে গড়াতে গড়াতে বন মোরগের লেজে গিয়ে পড়লো। তাতে বন মোরগের লেজের পালক ছিঁড়ে গেলো। ভয়ে বন মোরগটি একটি মরা ডালে বসলো। তৎক্ষণাৎ  মরা ডালটি ভেঙ্গে গিয়ে পড়লো বন্য শূকরের বাসায়। তাতে বন্য শূকর ভীষণ রাগান্বিত হয়ে আশপাশের সমস্ত কলা গাছ ধ্বংস করে ফেললো। কলা পাতায় ছিলো এক কলা বাঁদুরের বাসা। বন্য শূকরের তান্ডবে তার বাসা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বাঁদুর ভয়ে দিকবিদিক দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে রাজার হাতির নাকে ঢুকে পড়লো। রাজার হাতি ছটফট করতে করতে অবশেষে মারা গেল।

Cartoon Crab
লালা কাঁকড়া, ছবি: how-to-draw-cartoons-online.com

ভোর হলে রাজা পাইক পেয়াদা নিয়ে দেশ ভ্রমশের জন্য মাহুতিকে হাতি আনতে নির্দেশ দিলেন। মাহুত হাতির শালে গিয়ে দেখলো রাজার হাতিটি চিৎ হয়ে পড়ে আছে। খবর শুনে রাজার মাথায় যেন বজ্রপাত পড়লো। হাতির সমস্ত শরীর পরখ করে কোথাও হাতির মৃত্যুর কারণ জানা গেল না। শুধু নাক থেকে সমান্য রক্ত পড়তে দেখা গেলো। রাজার নির্দেশে হাতির নাক কাটতে গিয়ে একটি কলা বাঁদুর পাওয়া গেল। কলা বাদুরকে মেরে ফেলার জন্য আদেশ দিলেন রাজা।

ভয়ে বাঁদুর বললো – মহারাজ আমাকে জানে মারবেন না। আমার কোনো দোষ নেই। সমস্ত দোষ ঐ বন্য শূকরের। বন্য শূকর অন্ধকার রাতে আমার বাসা কেটে নষ্ট করে ফেলেছে। আমি উপায় না দেখে অন্ধকারে এদিক ওদিক দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে হাতির নাকটিতে না জেনে ঢুকেছি। আপনি আমায় ক্ষমা করুন হুজুর। বাঁদুরের কথা শুনে রাজা বললো – তাহলে বন্য শূকরের বাড়িতে সবাই চলো।

বন্য শূকরের বাড়িতে গেলে রাজা অতি রাগের স্বরে তাকে ডাকলেন – বন্য শূকর বেড়িয়ে এসো। ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বন্য শূকর ঘর থেকে বেড়িয়ে এলো।

এবার বল! তুমি কেন বাঁদুরের বাসা নষ্ট করেছো? কী হয়েছে তোমার শুনি? বাদুর তো ভয়ে অন্ধকার রাতে পালাতে গিয়ে আমার হাতির নাকে ঢুকেছে। তাতে আমার হাতি মারা গেছে। আজ তোমার গর্দান যাবে। বন্য শূকর ভয়ে হাত, পা কাঁপতে কাঁপতে বললো – মহারাজ আমার কোনো দোষ নেই। দোষ যতসব ঐ মরা ডালের। আমি ছেলেমেয়েদের নিয়ে মনের আনন্দে ঘুমোচ্ছিলাম। হঠাৎ মরা ডালটি আমার বাসার উপড় পড়ে। তাতে ভয়ে আমি আশেপাশের কলাগাছ মারিয়ে নষ্ট করেছি। কলা পাতায় যে বাঁদুর ভাইয়ের বাসা ছিল, তা আমার জানা ছিল না। জানা থাকলে কেউ কি এমন কাজ করে মহারাজ? আপনি বিচার করুন। বিচারে শূকরের কোন দোষ পাওয়া গেল না। তাহলে মরা ডালের বাড়িতে চলো। সবাই মরা ডালের বাড়িতে গেলো।

মরা ডাল ও মরা ডাল বাহিরে এসো। তোমার সাথে মহারাজের কথা আছে। ডাক দিলো উজির। উজিরের কথা শুনে ভয়ে ভয়ে মরা ডাল বেরিয়ে এলো। সাথে সাথে রাজা জেরা করতে শুরু করলেন – মরা ডাল, তুমি কেন শুকরের বাসায় পড়ছো? তোমার কি কোন পড়ার জায়গা নেই যে মনের মত তুমি শূকরের বাসায় পড়বে?

মরা ডাল বললো – না না মহারাজ আমার কোন দোষ নেই। আমার তো কোন হাত পা নেই। বন মোরগ যখন আমার উপর বসেছিলো তার ভার বহনের শক্তি না থাকায় আমি শূকরের বাসায় পড়ি। সব দোষ বন মোরগের।

তাহলে বন মোরগের বাসায় চলো। তাকে আজ মেরেই ফেলবো।

বনমোরগ ও বনমোরগ বেরিয়ে এসো। তোমাকে জবাই না করে আজ আমি শান্তি পাব না – রাজা বললেন। বন মোরগ ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বেড়িয়ে এলো। কী মহারাজ আপনি আমায় কেন ডেকেছেন? বনমোরগ বললো।

রাজা বললেন – তুমি কেন মরা ডালের উপর বসতে গেলে? মরা ডাল ছাড়া কি তোমার আর কোনো বসার জায়গা নেই? মরা ডালের কোন হাত পা নেই সেটি কি তুমি জান না? হাত পা না থাকায় সেটি পড়লো শূকরের বাসায়। শূকর রাগ করে আবার বাঁদুরের বাসা নষ্ট করেছে। তাতে বাঁদুর ভয়ে আমার হাতির নাকে ঢুকে গেলে আমার হাতি মারা গেলো। এখন দেখছি যত দোষ সবই তোমার। তখন বনমোরগ বললো – মহারাজ আমার কোন দোষ নেই। দোষ যত সব ঐ মিষ্টি কুমড়ার। আমি যখন আমার সন্তানদের নিয়ে ভাত খেতে বসেছিলাম তখন মিষ্টি কুমড়া গড়িয়ে এসে আমার লেজের উপর চাপা দেয়। তখন আমি তাড়াহুড়া করে না জেনে মরা ডালের উপর বসি। এছাড়া আমার কোন দোষ নেই। তাহলে সব দোষ দেখছি ঐ মিষ্টি কুমড়ার। এবার তাহলে মিষ্টি কুমড়ার বাড়িতে চলো – রাজা বললেন।

মিষ্টি কুমড়া বেরিয়ে এসো ডাক দিলো উজির। উজিরের ডাকে মিষ্টি কুমড়া বেরিয়ে এলো। এসে দেখে অনেক ভীড় করেছে তার ঘরের উঠানে। সাথে সাথে মহারাজ আবার জেরা করতে শুরু করলেন – মিষ্টি কুমড়া তোমার এত সাহস! তুমি কেন বন মোরগের লেজে পড়লে? তোমার কি আর পড়ার জায়গা নেই? তোমার কারণে আমার প্রিয় হাতিটি মারা গেল।

মিষ্টি কুমড়া বললো আমার কোন দোষ নেই। যত দোষ ঐ হরিণের! হরিণ আমার লতা ছিড়ে দিয়েছে। তাই আমি গড়িয়ে বন মোরগের লেজে পড়েছি। সব দোষতো হরিণের। তাহলে এবার হরিণের বাড়িতে চলো। হরিণ বেরিয়ে এসো আজ তোমার গর্দান যাবে। রাগান্বিত স্বরে রাজা ডাক দিলেন হরিণকে। হরিণ ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে ঘর থেকে বেরিয়ে এলো। রাজা দাঁতে দাঁত চেপে হরিণকে ধমকাতে লাগলেন। হরিণ তুমি কেন মিষ্টি কুমড়ার লতায় পাড়া দিলে? তোমার কারণে আমার হাতিটি মারা গেছে। রাজা সব ঘটনা খুলে বললেন। রাজার কথা শুনে হরিণ বললো – মহারাজ আমার কোন দোষ নেই। দোষতো উইনুং এর। উইনুং আমার পেটে পড়েছে। আমি ভয়ে পালাচ্ছিলাম। কখন যে মিষ্টি কুমরার লতায় পা দিই তা আমার খেয়ালে ছিল না। তাহলে উইনুং এর বাড়িতে চলো – রাজা বললেন। উইনুং বেরিয়ে এসো। রাজার ডাকে উইনুং বেরিয়ে এল। এরপর মহারাজ উইনুংকে সব ঘটনা খুলে বললেন। তখন উইনুং বললো – মহারাজ আমার কোন দোষ নেই। দোষ সব ঐ বানরের। বানর লাফালাফি করার একসময়ে আমার লতা ছিড়ে গেলে আমি মাটিতে পড়ে যাই। বানর যদি লাফালাফি না করতো তাহলে আমি কখনো মাটিতে পড়তাম না। তাহলে বানরের বাড়িতে চলো।

বানর বানর বেরিয়ে এসো। আজ তোমার গর্দান যাবে। তোমার কারণে আমার প্রিয় হাতিটি মারা গেছে – রাজা বললেন। বানর ভয়ে ভয়ে বললেন – আমার কোন দোষ নেই। দোষ যতসব রবখারের। রবখার আমাকে ধনু দিয়ে মারতে চেয়েছিল। তাই আমি লাফালাফি করে দৌঁড়াচ্ছিলাম। উইনুং-এর লতা যে ছিঁড়ে গেছে তা আমি খেয়াল করতে পারিনি। মহারাজ আমার কোন দোষ নেই। দোষ সবই ঐ রবখারের। তাহলে এবার রবখারের বাড়িতে চলো।

রবখার বেরিয়ে এসো। আজ তোমার শিরচ্ছেদ করা হবে। তোমার কারণে আমার প্রিয় হাতিটি মারা গেছে। এরপর রাজা সব ঘটনা রবখারকে খুলে বললেন। তখন রবখার বললো – আমার কোন দোষ নেই। দোষ সব ঐ ক্লুংবু্টের । ক্লুংবু্ট নাকি আমার সব সন্তান সিদ্ধ করে খেয়ে ফেলবে। আমি ক্লুংবু্টকে মারার জন্য ধনু বানিয়েছি। ধনু ঠিকঠাক আছে কিনা তা পরখ করার জন্য বানরের দিকে তাক করেছিলাম মাত্র। বানরকে মারার জন্য নয়। তাহলে এবার ক্লুংবু্টের বাড়িতে চল – রাজা বললেন।

মহারাজের ডাকে সারা পেয়ে ক্লুংবু্ট বেড়িয়ে এলো। তোমার দোষে আমার হাতিটি মারা গেছে। তুমি নাকি রবখারের ছেলেমেয়েকে সিদ্ধ করে ফেলেছো? রবখার তোমাকে মেরে ফেলার জন্য ধনু তৈরি করেছে। এরপর তো যতসব ঘটনা ঘটে গেলো – মহারাজ বললেন। মহারাজের কথা শুনে ক্লুংবু্ট বললো – মহারাজ আমার কোন দোষ নেই। বুট বুট শব্দ হলো আমাদের জাতের ডাক। রবখারের ছেলেমেয়েকে সিদ্ধ করার জন্য নয়। তাহলে সব দোষ রবখারের। রবখারকে আজ ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মারা হবে। তার জন্য আমার প্রিয় হাতিটি মারা গেছে। রায় দিলেন মহারাজ। উপস্থিত সবাই এক সুরে বললো – তাই হোক, তাই হোক। অনেকে রবখারের চর্বি খাওয়ার জন্য উদগ্রীব। রবখারকে ফাঁসির মঞ্চে ডাকা হলো। এমন সময় রবখার একটি বায়না ধরলো – মহারাজ আজকে আমাকে খাবেন না। আজ খেলে আমার সব সন্তান মারা যাবে। এখনো আমি তাদের জন্য কোন রান্না করিনি। আমার সন্তানদের খাবার রান্নার জন্য আপনি আমাকে একটু সময় দিন। আমি ঝিরি থেকে পানি এনে তাদের জন্য রান্না করবো। রবখার আবদার মঞ্জুর করে দিলেন রাজা। সবাই রবখারের ঘরে সমাবেত হয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো। এদিকে রবখার পানি আনার ভান করে বিরাট পাথরের নিচে গর্ত খুঁড়তে লাগলো। আর মাঝে মাঝে সামান্য পরিমাণে পানি আনতে লাগলো। রবখারের গায়ে কাদা দেখে শূকরের মনে সন্দেহ জাগলো। রবখার তোমার গায়ে কাদা মাটি কেনো? জবাবে রবখার বললো – পানি আনার সময় কয়েকজন দুষ্টু ছেলে আমার গায়ে কাদা মাটি মাখিয়ে দিয়েছে। এ কথা বলে পুনরায় গেলো ঝিরিতে গর্ত খুঁড়তে। কিছুক্ষণ পর আবার বাড়িতে এলো। রবখার কখন তোমার পানি আনার কাজ শেষ হবে? প্রশ্ন করলো বানর। আরো এক কলসি পানি আনতে হবে জবাব দিলো রবখার। এরপর রবখার আর ফিরে এলো না। দুপুর ঘনিয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেলো। রবখারের কোন হাদিস পাওয়া গেলো না। সে গর্তের ভিতর ঢুকে লুকিয়ে থাকল। অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর বিরাটকায় পাথরের নিচে গর্তের সন্ধান পেলো বানর। সবাই সেখানে গেলো পাথর সরানোর জন্য। একে একে সবাই পাথরটিকে সরাবার চেষ্টা করলো। কিন্তু সকল চেষ্টা ব্যর্থ হলো। তারপর সবাই একসাথে হাত দিলো পাথরটি সরানোর জন্য। এরপরও পাথরটিকে সরানো সম্ভব হলো না। এমন সময় ঝিরির উজান থেকে বুলবুলি এসে বললো – আমাকে যদি কলা ও পিঠা দেয়া হয় তাহলে আমি পাথরটি সরাতে পারবো। বুলবুলির কথায় কেউ কর্ণপাত করলো না। কিছুক্ষণ পর দোয়েল পাখি এসে বললো – আমাকে গঙ্গা ফড়িং ও মিষ্টি দিলে আমি পাথর সরাতে পারবো। দোয়েলের কথায় সাঁয় দিয়ে রাজা বললেন – তুমি সামান্য দোয়েল পাখি হয়ে এত বিরাটকায় পাথর কীভাবে সরাবে? এখান থেকে দূর হও। দোয়েল চলে গেলো। আবার সবাই চেষ্টা করলো পাথরটিকে সরানোর জন্য। কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না।

এমন সময় টুনটুনি পাখি এসে বললো- মহারাজ এখানে কী হচ্ছে? সবাই এখানে কী করছে? আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না। টুনটুনিকে রাজা সব কথা বললেন। তখন টুনটুনি বললো – মহারাজ আপনি যদি বিশ্বাস করেন তাহলে একটা কথা বলবো? রাজা নির্ভয়ে কথা বলতে বললেন। আমাকে এক চোঙা মিষ্টান্নজল, একমুটো বিনি ভাত ও শুকনো গরুর মাংস দিয়ে আপ্যায়ন করলে পাথরখানা সরিয়ে দিতে পারবো। অবিশ্বাস্য হলেও রাজা মাথা নেড়ে সম্মতি দিলেন। টুনটুনির কথা মতো সব জিনিস আনা হলো। টুনটুনি মাথায় পাগড়ি বেঁধে লেজ উঁচিয়ে পাথর সরাতে লাগলো, আর সাথে সাথে গায়ে শক্তি আহরণের জন্য ছড়া কাটতে লাগলো –

আঙ ওয়াচেক চা্ ক্লংহুই ক্লংপাং চা্
আঙ ইয়াক্লুং সিংপু হুয়ামং লক
লুমলক, লুমলক।

অনুবাদ:

ছোট্ট পাখি টুনটুনি ছোট্ট আমার হাত পা
বিরাট পাথর সরাবো আজ হেইয়া! হেইয়া!

এরপর টুনটুনির মুখে শুকনো গরুর মাংস, মিষ্টান্নজল, ও বিনি ভাত মুখে পুড়ে নিলো। আবার ছড়া কাটতে কাটতে পাথরখানা সরাতে লাগলো। তাতে পাথরখানা আস্তে আস্তে সরতে লাগলো। অদ্ভুত দৃষ্টিতে সবাই টুনটুনির কর্মকান্ড দেখতে লাগলো। রাজা খুশি হয়ে অনবরত প্রশংসা করতে লাগলেন টুনটুনিকে। অনেকক্ষণ পর পাথরটি যাদুর মতো সরে গেলো। সবাই নেমে রবখারকে খুঁজতে লাগলো কিন্তু কোথাও রবখারকে খুঁজে পাওয়া গেল না। টুনটুনি আবার বললো – অনুমতি দিলে আমি রবখারকে খুঁজে বের করতে পারি। তবে একটা শর্তে, তাহলো আমাকে রবখারের চর্বি দিতে হবে। না হলে আমি রবখারকে খুঁজবো না। আবারো টুনটুনির কথা রাখলেন রাজা। টুনটুনিও সাথে সাথে রবখারকে খুঁজে পেল। বানর রবখারকে দুই ভাগে ভাগ করলো। আর চর্বিগুলো টুনটুনিকে খাওয়ালো। টুনটুনি খুশি হয়ে চলে গেলো। রবখারের এক অংশ নদীর ভাটিতে আর এক অংশ উজানে ফেলে দেয়া হলো। একটি অংশ ঝোপে আটকে গেলো এবং অপর অংশটি ভাসতে ভাসতে কাছে এসে আবার দুটি অংশ একসাথে জোড়া লেগে গেলো।

উল্লেখ্য যে, কাঁকড়াদের আগে খোলস ছিল না। বানর দুই ভাগে বিভক্ত করার পর নাকি পুনরায় জোড়া লেগে কাঁকড়াদের খোলসের সৃষ্টি হয়েছে বলে ম্রোদের বিশ্বাস।


সিংইয়ং ম্রো
ম্রো রূপকথা, লোককাহিনী ও কিংবদন্তি

জুমজার্নালে প্রকাশিত লেখাসমূহে তথ্যমূলক ভুল-ভ্রান্তি থেকে যেতে পারে অথবা যেকোন লেখার সাথে আপনার ভিন্নমত থাকতে পারে। আপনার মতামত এবং সঠিক তথ্য দিয়ে আপনিও লিখুন অথবা লেখা পাঠান। লেখা পাঠাতে কিংবা যেকোন ধরনের প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন - jumjournal@gmail.com এই ঠিকানায়।

আরও কিছু লেখা